বিসিএস প্রিলিতে আশাকরি এখান থেকে কমন পাবেন। তাছাড়া অন্যান্য পরীক্ষা যেমন ব্যাংক জব, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, নন-ক্যাডার জব পরীক্ষারও প্রশ্ন আসে চর্যাপদ থেকে। বিসিএস প্রিলির জন্য বাংলা সাহিত্যের আরো টিউটোরিয়াল পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন, আমাদের কনটেন্টটি শেয়ার করে অন্যকে দেখার সুযোগ করে দিন।
১) বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন কি?
– চর্যাপদ
২) চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের কোন যুগের কাব্য নিদর্শন?
আদি যুগের
৩) চর্যাপদ এক প্রকার?
গান ও কবিতা।
৪) চর্যা শব্দের অর্থ কি?
-আচরণ
৫) চর্যাপদের অন্য নাম কি?
চর্যাগীতিকোষ বা দোহাকোষ।
৬) ‘চর্য্যাচর্যবিনিশ্চয়’নামটি দিয়েছিলেন কে?
-হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
৭) চর্যাপদের প্রতিপাদ্য বিষয় কি?
বৌদ্ধ সহজিয়াদের সাধন সঙ্গীত।
৮) চর্যাপদ রচিত হয় কোন আমলে?
পাল আমলে।
৯) চর্যাপদ রচিত হয় কত সনে?
-শহীদুল্লাহর মতে ৬৫০-১২০০ খ্রীঃ আর সুনীতিকুমারের মতে ৯৫০-১২০০ খ্রীঃ
১০) চর্যাপদের বয়স আনুমানিক কত বছর?
১০০০ বছর
১১) চর্যাপদ আবিষ্কারের সূত্র কি?
১৮৮২ সালে প্রকাশিত রাজেন্দ্রলাল মিত্রের “Sanskrit Buddhist Literature in Nepal” গ্রন্থের সূত্র ধরে চর্যাপদ আবিষ্কৃত
হয়।
১২) চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয় কত সনে?
১৯০৭ সালে (বাংলা ১৩১৪)।
১৩) চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয় কোথা থেকে?
নেপালের রাজগ্রন্থশালা থেকে।
১৪) চর্যাপদ আবিষ্কার করেন কে?
-মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী (৩ বারের চেষ্টায়)
১৫) চর্যাপদের প্রথম পদটির রচয়িতা কে?
লুইপা
১৬) চর্যাপদের পদগুলো টীকার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন কে?
মুনিদত্ত
১৭) চর্যাপদের তিব্বতীয় অনুবাদ প্রকাশ করেন কে?
প্রবোধচন্দ্র বাকচি // সংগৃহীত
১৮) চর্যাগীতির অন্তর্নিহিত তত্ত্বের ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন কে? শশিভূষণ দাশগুপ্ত (১৯৪৬)
১৯) চর্যাপদের ধর্মমত সম্পর্কে প্রথম আলোচনা করেন কে? শহীদুল্লাহ (১৯২৭)
২০) কোন পদটি আংশিক পাওয়া গেছে?
২৩ নং পদ
২১) চর্যাপদের কয়টি পদ পাওয়া গিয়েছে?
সাড়ে ৪৬ টি
২২) চর্যাপদে কতটি প্রবাদ বাক্য পাওয়া যায়?
৬টি
২৩) ২৩ নং পদের রচয়িতা কে?
ভুসুকু পা।
২৪) চর্যাপদের আধুনিক্ পদকর্তা কে?
সরহপা> ভুসুকুপা।
২৫) মুনিদত্ত কোন পদটি ব্যাখ্যা করেন নি?
১১ নং পদ।
২৬) চর্যাপদের ভাষা হল প্রচ্ছন্ন ভাষা-কে বলেছেন?
ম্যাক্স মুলার।
২৭) চর্যাপদের ভাষায় প্রভাব রয়েছে কোন কোন ভাষার?
হিন্দি, অপভ্রংশ (মৈথিলী), অসমিয়া, উড়িয়া।
২৮) চর্যাপদের পদসংখ্যা কয়টি?
শহীদুল্লাহর মতে ৫০ টি, সুকুমার সেনের মতে ৫১ টি।
২৯) চর্যাপদের সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেন কে?
কাহ্নপা (অপর নাম কৃষ্ণাচার্য)।
৩০) সর্বপ্রথম চর্যাপদের ভাষা নিয়ে আলোচনা করেন কে? বিজয়চন্দ্র মজুমদার (১৯২০)।
৩১) অপণা মাংসে হরিণা বৈরী-প্রবাদটির রচয়িতা কে?
ভুসুকু পা।(সৌরাষ্ট্রের রাজপুত্র)
৩২) চর্যাপদের পদকর্তা কতজন?
-শহীদুল্লাহর মতে ২৩ জন (Buddist Mystic Songs); সুকুমার সেনের মতে ২৪ জন (বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস)।
৩৩) চর্যাপদের সহোদর ভাষা কি কি?
অসমিয়া ও উড়িয়া।
৩৪) কে কয়টি পদ রচনা করেন?
কাহ্নপা-১৩টি, ভুসুকুপা-৮টি, সরহ পা-৪টি, লুই-শান্তি-শবরী এরা ২টি করে,বাকিরা ১টি করে। তন্ত্রীপা ও লাড়িডোম্বীপার কোন পদ পাওয়া যায়নি।
৩৫) চর্যাপদের ভাষা কে আলো আধারি ভাষা বলেছেন কে? হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
৩৬) চর্যাপদের বাঙালি কবি কে কে? শবর পা, লুইপা, ভুসুকু পা, জয়ানন্দ।
৩৭) চর্যাপদের শ্রেষ্ঠ কবি কে?
শবর পা (লুইপার গুরু)
৩৮) চর্যাপদের অনুমিত মহিলা কবি কে?
কুক্কুরী পা
৩৯) চর্যাপদের কোন কোন পদগুলো পাওয়া যায়নি?
→২৩(এর ৬টি লাইন পাওয়া গেছে) কোন পদগুলি পাওয়া যায় নি? →২৪,২৫,৪৮নং পদ।
৪০) চর্যাপদের ভাষা দুর্বোধ্য হওয়ার কারন কি?
তন্ত্র ও যোগের প্রতাপের জন্য
৪১) চর্যাপদ প্রকাশিত হয় কত সনে?
১৯১৬ সালে।
৪২) চর্যাপদ প্রকাশিত হয় কোথা হতে?
–কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর সম্পাদনায়।
৪৩) চর্যাপদ প্রকাশিত হয় কি নামে?
—“হাজার বছরের পুরাণ বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা” নামে।
৪৪) নেপালের রাজগ্রন্থাগারে চর্যাপদের সাথে প্রাপ্ত ডাকার্ণব ও দোহাকোষ বই ৩টি কোন ভাষায় লেখা?
অর্বাচীন অপভ্রংশ।
৪৫) চর্যাপদের আদি কবি কে?
লুইপা।
৪৬) চর্যাপদের প্রথম পদটি কি?
—“কাআ তরুবর পাঞ্চ বি ডাল/চঞ্চল চীএ পৈঠা কাল”
৪৭) চর্যাপদের প্রথম বাঙালি কবি কে?
মীননাথ/মাৎসেন্দ্রনাথ। তাঁর কোন পূর্ণাঙ্গ পদ পাওয়া যায়নি।
৪৮) চর্যাপদ কেন ছন্দে লেখা?
গোপাল হালদারের মতে মাত্রাবৃত্ত ছন্দে
৪৯) সুনীতিকুমারের মতে চর্যাপদের ভাষায় কোন অঞ্চলের ভাষার নমুনা পরিলক্ষিত হয়?
পশ্চিম বাংলার প্রাচীন কথ্য ভাষা।
৫০) চর্যাপদের ভাষা কি?
প্রাচীন বাংলা।
৫১) শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের ভাষা কিরূপ?
বঙ্গকামরূপী।
৫২) চর্যাপদের ভাষা বাংলা-কে প্রমাণ করেন?
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়।
৫৩) চর্যাপদের বেশিরভাগ পদ কত চরণে রচিত?
১০ চরণ
১) আশ্চর্যচর্যচয়
২) চর্যাচর্যাবিনিশ্চয়
৩) চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়
৪) চর্যাগীতিকোষ
৫) চর্যাগীতি!চর্যাপদ মানে আচরণ / সাধনা!
মোট ৫১ টি পদ ছিল। ৪৬টি পূর্ণ পদ আবিষ্কৃত হয়। আবিষ্কারের সময় উপরের পৃষ্ঠা ছেঁড়া থাকার কারোনে সবগুলো পদ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এবং পরে একটি পদের অংশবিশেষ সহ মোট
সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ আবিষ্কৃত হয়।
চর্যাপদে কবির সংখ্যা কতজন?
চর্যাপদে সর্বমোট ২৪জন কবির নাম পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ১ জন কবির পদ পাওয়া যায়নি তার নাম –তন্ত্রীপা / তেনতরীপা। সেই হিসেবে সেই হিসেবে পদ প্রাপ্ত কবির মোট সংখ্যা ২৩
জন।
১) লুইপা
২) কাহ্নপা
৩) ভুসুকপা
৪) সরহপা
৫) শবরীপা
৬) লাড়ীডোম্বীপা
৭) বিরূপা
৮) কুম্বলাম্বরপা
৯) ঢেন্ডনপা
১০) কুক্কুরীপা
১১) কঙ্ককপা
পদ > পাদ > পা
পাদ > পদ > পা
পদ রচনা করেন যিনি তাদেরকে পদকর্তা বলা হত যার অর্থ সিদ্ধাচার্য / সাধক (এরা বৌদ্ধ সহজিয়া ধর্মের সাধক ছিলেন
২ টি কারণে চর্যাপদের কবিদের নামের পাশে পা দেওয়া হত
১) পদ রচনা করতেন
২) সম্মান / গৌরবসূচক কারনে
লুইপা: বৌদ্ধধর্মের একজন মহাসিদ্ধ, কবি ও বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের রচয়িতা ও চর্যাপদের আদিকবি। লুইপার রচিত পদের সংখ্যা ২ টি। চতুরাশিতি সিদ্ধ প্রবৃত্তি গ্রন্থে লুইপাকে ৮৪জন মহাসিদ্ধের একজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই গ্রন্থ অনুসারে সিংহলদ্বীপে এক রাজার দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন লুইপা।
কাহ্নপা: চর্যাপদের আদি কবিদের অন্যতম একজন হলেন কাহ্নপা। তিনি মোট ১৩ টি পদ রচনা করেন। তিনি সবচেয়ে বেশী পদ রচনা করেন। তার রচিত পদের মধ্য উদ্ধার করা হয়েছে ১২ টি। তার রচিত ২৪ নং পদটি পাওয়া যায়নি। তিনি চিলেন বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য ও চর্যাপদকর্তা। তাহার আসল নাম কৃষ্ণাচার্য পাদ। চর্যাপদের কবিদের মধ্যে তিনিই ছিলেন শ্রেষ্ঠ কবি।
ভুসুকপা: চর্যাপদের কবিদের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন বাঙালি কবি হলে ভুসুকুপা। শান্তিদেবের অপর নাম ছিল ভুসুকু (মহাযান বৌদ্ধমতে)। সৌরাষ্ট্রের রাজপুত্র ছিলেন তিনি। তার বাবার মৃত্যুর পর সিংহাসন ত্যাগ করে নালন্দাতে আসেন তিনি এবং বৌদ্ধাচর্য জয়দেবের কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি কুটিরে সবসময় গোপনে অধ্যায়ন করতেন। পদসংখ্যার রচনার দিক দিয়ে ২য় স্থানে রয়েছেন ভুসুকুপা। তিনি মোট ৮টি পদ রচনা করেন। তার বিখ্যাত কাব্যঃ অপনা মাংসে হরিণা বৈরী অর্থ – হরিণ নিজেই নিজের শত্রু
সরহ পা: পূর্ব ভারতের এক ব্রাহ্মণ পরিবারে সরহ পার জন্মগ্রহন করেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি শিক্ষা লাভ করেন। অঙ্গিকা কবি এবং প্রাচীনতম মহাসিদ্ধ রূপে অনুমান করা হয় তাকে। সরহ পা বিখ্যাত বৌদ্ধ পন্ডিত শান্তরক্ষিতের শিষ্য হরিভদ্রের ছাত্র ছিলেন। সেই হিসেবে সরহ পা অষ্টম শতাব্দীর শেষ বা নবম শতাব্দীর প্রথমার্ধের সময়কালের মানুষ বলে মনে করা হয়। চর্যাপদের (২২, ৩২, ৩৮ এবং ৩৯ নম্বর) পদের রচয়িতা ছিলেন সরহ পা। নেপালী ভাষায় তাঁর পদগুলিকে ১১০১ খ্রিষ্টাব্দে অনুবাদ করা হয়। সরহপাকে চর্যাগীতিকার প্রধান কবি বলেও মান্য করা হয়।
শবরীপা: চর্যাপদের অন্যতম বাঙালি কবি শবরীপা। বাঙ্গালী কবি হিসেবে গবেষকগণ তাকে চিহ্নিত করেছেন। ধারণা করা হয় ভাগীরথী নদীর তীরে বসবাস করতেন তিনি। আর যদি তিনি ভাগীরথী নদীর তীরে বসবাস না করতেন তাহলে বাঙ্গালী কবি হবেন না। শবরীপার গুরু ছিলেন সরহপাদানাম্ এবং শিষ্য ছিলেন লুইপাদানাম ।
চর্যাগীতিতে তাঁর রচিত পদের সংখ্যা দুটি পদ।
পদসংখ্যা ২৮- উষ্ণা উষ্ণা পাবত তহিঁ বসই সবরী বালী
পদসংখ্যা ৫০- অণত গঅণত তইলা বাড়ী হিএঁ কুরাড়ী
কুক্কুরীপা: লুইপার শিষ্য ছিলেন কুক্কুরীপা এবং তার শিষ্যেরা হলেন ডোম্বীপা ও বিরুপা। লুইপার শিষ্য দারিকপা’র সমসাময়িক ছিলেন কুক্কুরীপা। ৮১০-৮৮০ খ্রিষ্টাব্দের কবি ছিলেন তিনি। কুক্কুরীপা নামটি কুক্কুরীপাদ নামের সংক্ষেপ। তাঁর নাম ও জন্মস্থান নিয়ে নানা মত রয়েছে- সুকুমার সেনের মতে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে তিনি বাঙ্গালা দেশের লোক। তার রচিত পদের সংখ্যা ২ টি। রচনায় মেয়েলী ভাব থাকার কারণে গবেষকগণ তাকে মহিলা কবি হিসেবে সনাক্ত করেন। কুক্কুরী সবসময় এই কবির সাথে থাকতো বলে তার নাম হয়েছে কুক্কুরীপা- তারানাথের মতে। তার রচিত পদ ৩টি।
এই পদ ৩টির চর্যাগুলো হলো-
সংখ্যা ২- দুলি দুহি পীঢ়া ধরণ ন জাই
পদ সংখ্যা ২০- হউঁ নিরাসী খমণ ভতারী
পদ সংখ্যা ৪৮- কুলিশ-ভর-নিদ বিআপিল
এই ৪৮ সংখ্যক পদটি হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর আবিষ্কৃত চর্যাগীতিগুলোর ভিতরে ছিল না। ডঃ প্রবোধচন্দ্র বাগচী তিব্বতী অনুদিত এই পদটি সংগ্রহ করেন। এই অনুবাদ অনুসারে ডঃ সুকুমার সেন এর একটি কল্পিত পাঠ তৈরি করেন।
তন্ত্রীপা: চর্যাপদের কবি তন্ত্রীপা কোন রচনাই পাওয়া যায় নি। উনার রচিত পদটি ২৫ নং পদ।
ঢেন্ডনপা: চর্যাপদে আছে যে বেদে দলের কথা, ঘাঁটের কথা, মাদল বাজিয়ে বিয়ে করতে যাবার উৎসব, নব বধুর নাকের নথ ও কানের দুল চোরের চুরি করার কথা সর্বোপরি ভাতের অভাবের কথা ঢেন্ডনপা রচিত পদে তৎকালীন সমাজপদ রচিত হয়েছে। তিনি পেশায় তাঁতি টালত মোর ঘর নাই পড়বেশী।